যুবককে পানিতে চুবিয়ে নির্যাতন ছাত্রলীগ নেতার। চারঘাট উপজেলায় দুই যুবক এক ছাত্রলীগ নেতার ভয়ংকর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মাদক বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় একজনকে প্রথমে মাটিতে পুঁতে এবং পরে হাত-পা বেঁধে পানিতে চুুবিয়ে নির্যাতন করে ছাত্রলীগ নেতা আবদুর ওয়াদুদ শুভ।
অপরজনের বাম হাত তিনি ভেঙে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের ভিডিও শনিবার ভাইরাল হয়েছে।
উপজেলার শলুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর ওয়াদুদ শুভ এবং তার সহযোগীরা দুই যুবককে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালায়।
নির্যাতনের শিকার দুই যুবক হলেন-শলুয়া ইউনিয়নের কানাজগাড়ি গ্রামের আবু বক্করের ছেলে নূর মোহাম্মদ পলক (১৮) এবং তার খালাতো ভাই একই গ্রামের সৈকত আলীর ছেলে শাকিল রহমান (২০)। মাটিতে পুঁতে ও পানিতে চুবিয়ে পলককে নির্যাতন করা হয়। আর চোখ-মুখ বেঁধে পিটিয়ে শাকিলের হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, হাত-পা বেঁধে একটি খুঁটির সঙ্গে পলককে একটি পুকুরে হাঁটু পানিতে ফেলে রাখা হয়েছে। মাঝে মাঝে চেষ্টা করে মাথা তুলে শ্বাস নিচ্ছেন তিনি। আর পাশে একজন দাঁড়িয়ে দেখছেন এবং আরেকজন স্বীকারোক্তি আদায় করার ভিডিও ধারণ করছেন।
নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ নেতা শুভ শলুয়া গ্রামের সাজেদুর রহমানের ছেলে। তার সহযোগীরা হলো-শলুয়া গ্রামের সইমুদ্দির ছেলে সাব্বির, আনজু আলীর ছেলে মুক্তা ও রমজান আলীর ছেলে লালন। তারা সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
নির্যাতিত শাকিল রহমান জানান, দুদিন আগে শুভ ও মুক্তা আমাদের বাড়িতে এসে তাদের সরবরাহ করা ফেনসিডিল বিক্রি করার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে আমাকে ও পলককে নির্যাতন করা হয়। শুভ ও তার লোকজন আমাকে তুলে নিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে নির্যাতন করে আমার বাম হাত ভেঙে দেয় এবং আমাকে রাস্তার পাশে ফেলে যায়।
শাকিল বলেন, এ ঘটনা প্রকাশ না করার জন্যও হুমকি দিয়েছে। প্রকাশ করলে গুলি করে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছেন শুভ ও তার সহযোগীরা। শাকিল আরও জানান, শলুয়ার কানাজগাড়ি মোড় থেকে পলককে তুলে নিয়ে যায় শুভ ও তার লোকজন। বামনদিঘি বিলে নিয়ে তার হাত-পা ও চোখ-মুখ বেঁধে প্রথমে মাটিতে পুঁতে ও পরে পানিতে চুবিয়ে নির্যাতন করা হয়। এ সময় তারা পলকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার স্বীকারোক্তি আদায় করার চেষ্টা করে এবং সেটি তারা মোবাইল ফোনে ধারণ করে।
আরও পড়ুনঃ সোনাগাজীতে পিস্তল ঠেকিয়ে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি
এ ব্যাপারে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে আবদুর ওয়াদুদ শুভ এ নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেন। পলক ও শাকিলকে চেনেন না বলেও তিনি জানান। তাই এ ব্যাপারে তিনি কোনো কথা বলতে চান না। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এ ধরনের কাজ করছে।
চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মুক্তার, সাব্বির ও লালনকে গ্রেফতার করেছিলাম। এখন তারা জামিনে রয়েছে। শুভ ও তার সহযোগীদের নির্যাতনের বিষয়ে পুলকের পরিবার অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :