জিম্বাবুয়েকে নিয়ে উড়ন্ত স্বপ্ন পাকিস্তানে জন্মগ্রহণকারী লড়াকু পাইলট রাজা। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেও সিকান্দার রাজা জিম্বাবুয়ের হয়ে সেই পাকিস্তানকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারিয়ে এখন উড়ে চলেছেন অনন্য উচ্চতায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গতকাল জন্মস্থানের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ে সবচেয়ে বড় ভুমিকাটি পালন করেছেন তিনি।
পাকিস্তানে জন্মগ্রহন করা ৩৬ বছর বয়সি এই অলরাউন্ডার হতে চেয়েছিলেন পাইলট। তবে পাকিস্তানে তিনি প্রত্যাখ্যাত হন এবং তার পরিবারের সঙ্গে পাড়ি জমান জিম্বাবুয়ে। এই সময় তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করেছেন স্কটল্যান্ডে। তবে তার রক্তে মিশে ছিল ক্রিকেট। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলে ডাক পাবার আগে সেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন সক্রিয়।
ক্রিকেটটাকে বেশ কঠিনভাবে রপ্ত করেছেন জানিয়ে রাজা বলেন,‘ আমি কিছুটা দেরিতে ক্রিকেটে এসেছি,তবে এরই মধ্যে হারিয়ে যাওয়া সময় পুষিয়ে নিয়েছি। অভিবাসন নেয়া দেশটির জন্যও বিষয়টি একই। জিম্বুবুয়েতে বেশীরভাগ শিক্ষাই নিতে হয় চাকুরিরত অবস্থায়। আমরা শীর্ষ দেশগুলোর সঙ্গে খুব বেশী একটা খেলার সুযোগ পাই না। ফ্লাড লাইটের আলোতে খেলারও সুযোগ নেই। পার্থে এটি ছিল আমার প্রথম ম্যাচ।
গতকাল বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক রানের রোমঞ্চকর জয়ে বড় ভুমিকাটি ছিল রাজার। তিনি ব্যাট হাতে দারুন দক্ষতা প্রদর্শনের পাশাপাশি বল হাতেও নায়কোচিত পারফর্মেন্স দেখিয়েছেন। ২৫ রানে তুলে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এই জয়ে গ্রুপে ভারতের নেতৃত্বাধীন পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে জিম্বাবুয়ে। আর পাকিস্তান পৌঁছে গেছে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে।
ম্যাচ শেষে রাজা বলেন, অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তী রিকি পন্টিংয়ের কাছ থেকে পাওয়া প্রশংসা বড় মঞ্চে খেলার সময় তাকে অনুপ্রানীত করেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সাম্প্রতিক এক ক্লিপে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক পন্টিং জিম্বাবুয়ের উচ্চসিত প্রশংসা করার পাশাপাশি পছন্দের খেলোয়াড় হিসেবে বেছে নিয়েছেন রাজাকে।
আরও পড়ুনঃ টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন ইলন মাস্ক : উচ্চ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত
পন্টিং বলেন,‘ তার বয়স এখন ৩৬ বছর হলেও খেলছেন একবারে তারুন্যের উচ্ছাস নিয়ে। মনে হচ্ছে সে আবার ২৬ বছর বয়েসে ফিরে গেছে। সে মাঠের চারপাশে দৌঁড়াচ্ছে, নিজেকে উপভোগ করছে এবং সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।’
রাজা বলেন এটি তাকে দারুনভাবে অনুপ্রানীত করেছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ সকালে আমি যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখনই আমার বন্ধুর পাঠানো বার্তাটি আমি পাই। সে বলেছে, তুমি কি আইসিসি’র ক্লিপ দেখেছ? সেখানে রিকি পন্টিং জিম্বাবুয়ে দল এবং তোমাকে নিয়ে কথা বলেছেন।
আমার কিছু বন্ধু এবং পরিবারের সদস্য তাদের ক্ষুদে বার্তায় লিখেছে, আমার জন্য তাদের চোখে জল এসে গেছে। এই খেলার একজন কিংবদন্তী জিম্বাবুয়ে এবং আমাকে নিয়ে মন্তব্য করেছে শুনে মুহুর্তেই আমি শিহরিত হয়ে পড়ি। তারপরও আমি শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি, পাশাপাশি এই ম্যাচে নিজেকে অনুপ্রানীত করতে চেয়েছি।’
[…] […]