যশোর থানায় ভূক্তভোগীর অভিযোগ মুজিব সড়কে ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। একটি চাঁদাবাজ চক্র যশোর শহরের মুজিব সড়কে ব্যবসায়ীদের জিম্মী করে ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে। দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি চাঁদাবাজি মাস্তানি করলেও কেউ তাদের অপকর্মেও কোন প্রতিবাদ করেনা। সুষ্ঠ ব্যবসার স্বার্থে ব্যবসায়ীরা কোন টু শব্দ করেনা। সম্প্রতি একজন ভূক্তভোগী ওমর আল জাবীর কোতয়ালী মডেল থানায় ঐ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন।
মিশনপাড়ার রাজিব (৩৫) ও আরাফাত (২৫) এই চক্রটির নেতৃত্বে দিচ্ছে। তবে মিশনপাড়া বসবাস হলেও এরা চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও স্টেডিয়ামপাড়ায় আড্ডা মারে বলে জোর অভিযোগ রয়েছে। যশোর কোতয়ালী মডেল থানার পেশকৃত অভিযোগ পত্র থেকে জানা গেছে, শহরের রেলগেটের হাফিজুর রহমানের পুত্র ওমর আলী জাবীর (২৭) মুজিব সড়কে কাপড় ব্যবসায়ী। এছাড়া তাদের মার্কেট রয়েছে।
সেখান থেকে ভাড়া উঠানোর দায়িত্ব এই জাবীরের। গত ১৫ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে রাইস দোকানে পৌছালে রাজিব, আরাফাতসহ আরো কয়েকজন সেখানে হাজির হয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে। কিসের টাকা জিজ্ঞাসা করিলে তারা জানায় এটা চাঁদার টাকা। তা দিতে রাজি না হওয়ায় রাজিব-আরাফাতসহ তাদের সহযোগীরা জাবীরকে আঘাত করিয়া ফেলে দেয়।
এসময় রাজিব জাবীরের পকেটে থাকা নদন ১০ হাজার টাকা জোরপূর্বক কেড়ে নেয়। বাকি টাকার জন্য এসময় চাপাচাপি সৃস্টি করে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে টাকা না দিলে জাবীরকে খুন করার হুমকি দিয়ে রাজিব ও তার সহযোগীরা চলে যায়। পরদিন ওমর আল জাবীর কোতয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ করে।
কোতয়ালী মডেল থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বুধবার ঘটনাস্থল ও আসামীদের বাড়ি অভিযোগের তদন্তে যায়। তবে তাদের বাড়ি পাওয়া যায়নি। এদিকে বাড়ি পুলিশ যাওয়ার খবর জেনে ঐ অভিযুক্তরা শুক্রবার রাত আনুমানিক ৯ টা ৪০ মিনিটের দিকে মুজিব সড়কের একজন
ব্যবসায়ীকে ধাওয়া করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসময় ৫/৬ জন দূর্বত্ত মোটরসাইকেলে একজন ব্যবসায়ীকে ধাওয়া করে বলে প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানায়। ধাওয়াকারীদের হাতে গাছিদা ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে জানা যায়। তবে ঐ ব্যবসায়ির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারনা করা
হচ্ছে, গোপনে মুজিবসড়কে চাঁদাবাজি চলার বিষয়টি রাজনৈতিক নেতাদের কর্নগোচর হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ দূর্বত্তরা কয়েকজন ব্যবসায়ীকে টার্গেট করেছে। প্রাণভয়ে ঐ ব্যবসায়ী এখন আর দোকান খুলছে না। এ বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীরাও যেন মুখে কুঁলুপ এঁটেছে।
আরও পড়ুনঃ যশোরে ফলের বাজার চড়া, ইচ্ছাখুশি দাম বিক্রেতা ব্যবসায়ীদের
এদিকে মুজিব সড়কের ব্যবসায়ীরা নাম না প্রকাশের স্বার্থে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ঐ চক্রটি চাঁদাবাজি মাস্তানী করলেও তারা ব্যবসার স্বার্থে মুখ বুজে সব সহ্য করে। কিন্ত ইদানীং ঐ চক্রটি বেপরোয়া হয়ে গেছে। এরা ২৪ ঘন্টা নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে। তাদের মুখ থেকে মদের গন্ধ বের হয়। এরা দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত যে কোন সময়ে মুজিব সড়কের টার্গেট ব্যবসায়ীদের কাছে এসে ধার্য্যকৃত চাঁদার টাকা নিয়ে আবার সরে চলে যায়। সেখানে বেশি সময় থাকেনা।
তবে তাদের কয়েকজন এজেন্ট সেখানে কয়েকটি স্পটে নিয়মিত অবস্থান করে। ব্যবসায়ীরা জানায় এসব এজেন্টরা রাবারতলা, রুপকথার মোড়, রেলগেট ও পঙ্গু হাসপাতালের আশেপাশে থাকে। প্রাণভয়ে কেউ তাদের অপকর্মের কোন প্রতিবাদ করেনা।
এদিকে থানায় অভিযোগের পর যশোরের প্রবাবশালীরা অভিযোগকারীর উপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে জোর অভিযোগ রয়েছে। কয়েকজন তাকে সতর্ক করে দিয়েছে। এসব নিয়েও মুজিব সড়কে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। তবে ঘটনা যায় হোক না কেন ব্যবসায়ী সুষ্ঠ ব্যবসার স্বার্থে এসব চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এ্যাকশন দাবি করেছেন। কেননা এই চক্রটি মুজিবসড়কে ও রেলগেটে ব্যবসার দারুন পরিবেশ বিঘ্নিত করছে।
আপনার মতামত লিখুন :