মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে তীব্র সংঘাতে জান্তা বাহিনীর দুই কর্নেল ও একজন মেজরসহ ২৩ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার (৬ মার্চ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আরাকান আর্মি। খবর দ্য ইরাবতির।
বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, রাখাইনের পোন্নাজ্ঞিয়ুন শহরে গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে সামরিক বাহিনীর ৫৫০তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিন বিভাগের (এলআইবি ৫৫০) সঙ্গে সংঘাত বাঁধে গোষ্ঠীটির। ১৩ দিন ধরে ব্যাপক যুদ্ধ চলার পর গত ৪ মার্চ এলআইবি ৫৫০’র হেড কোয়ার্টার দখলে নেয় এএ। হেড কোয়ার্টার ও তার আশপাশের এলাকা থেকে এই সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে আরাকান আর্মি।
নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিচয়ও উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলেন কর্নেল মায়ো মিন কো কো, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিও দু অং এবং মেজর সো হাতওয়ে।
আরও পড়ুন: অনুশীলনে ফিরেছেন সালাহ
৫৫০তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি বিভাগের হেডকোয়ার্টার দখলের পশাপাশি সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ, সামরিক সরঞ্জাম এবং কয়েকটি সাঁজোয়া যান জব্দ করেছে আরাকান আর্মি। সেই সঙ্গে পোন্নাজ্ঞিয়ুন শহরকে মুক্তাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে গোষ্ঠীটি।
রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ে থেকে পোন্নাজ্ঞিয়ুনের দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটার। পোন্নাজ্ঞিয়ুনের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার আগে সিতওয়ের নিকটবর্তী পাউকতাও শহরও দখলও করেছে আরাকান আর্মি। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির দলকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে জেনারেল মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই দেশটির বিভিন্ন জায়গায় জোরালো হতে থাকে জান্তা বিরোধী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সম্ভাব্য সময়
তবে সময়ের ব্যবধানে পাল্টাতে থাকে সেই চিত্র। বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের শক্তি আরও বাড়িয়ে পুরো দেশে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে মিয়ানমার পরিস্থিতি। দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের সঙ্গে সীমান্তবর্তী প্রদেশে সামরিক সরকারের লড়াই এখন তুঙ্গে। বিদ্রোহীদের হামলায় শান ও রাখাইন প্রদেশে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সামরিক জান্তা। এমনকি রাখাইনে আরাকান আর্মি যেভাবে শক্তি বাড়িয়ে বিভিন্ন এলাকা দখল করে নিচ্ছে এতে বিচলিত হয়ে পড়েছে মিয়ানমার সরকার।
আপনার মতামত লিখুন :