যশোরে অরক্ষিত রেলক্রসিং দায়িত্ব পালনে গেটকিপার অনীহা। পশ্চিমাঞ্চলের রেলপথে যশোর অংশে প্রকল্পের অধীনে দায়িত্বে থাকা গেটকিপারদের বেতন-ভাতা বন্ধ।
এ কারণে গেট ফেলে অন্য চাকরিতে ছুটছেন তারা। এতে অরক্ষিত হয়ে গেছে যশোরের রেলক্রসিং। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ১৩তম একনেক সভায় প্রকল্পভুক্ত গেইটকিপারদের রাজস্ব খাতে ¯স্থানান্তরের আশ্বাস দেওয়া হয়। রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনও প্রকল্প গেটকিপারদের চাকরি রাজস্ব করণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ৬ মাস হলো তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে।
এ অনিশ্চয়তায় অনেকে নতুন চাকরির সন্ধান করছেন। ফলে অনেক রেলক্রসিং থাকছে গেটম্যান শূন্য। পূর্ব-পশ্চিম ঐক্যপরিষদের তথ্য মতে, পূর্ব-পশ্চিম মানউন্নয়ন শীর্ষক গেটকিপার প্রকল্পের মোট ১৮৮৯জন চাকরিতে যোগ দেন। এরমধ্যে বেতনভাতা অনিয়মিত এবং চাকরি অনিশ্চিত হওয়াতে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ৩৮৫জন। বর্তমানে মোট ১৫০৪জন গেটকিপার দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে, পূর্বাঞ্চলে ১০৩৮জনের মধ্যে বর্তমানে চাকরিতে আছেন ৭৬৬জন। অন্যদিকে, পশ্চিমাঞ্চলে ৮৫১জনের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন ৭৩৯জন। তবে পশ্চিমাঞ্চলের রেলপথে যশোর অংশে প্রকল্পের অধীনে দায়িত্বে থাকা ১৩৫ জনের মধ্যে গেটকিপার আছেন ১১১ জন। নাম না প্রকাশের শর্তে যশোর অংশে প্রকল্পের অধীনে দায়িত্বে থাকা ৫ জন গেটকিপার জানান, আমাদের ছয় মাস ধরে বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে খুব অসহায় অবস্থায় দিন পার করতে হয়েছে।
ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংসারিক খরচ চালাতেও হিমশিম খেতে হয়েছে। তারপরও আমাদের যেন রাজস্বকরণ করা হয়। ইতোমধ্যে আমাদের অনেকের চাকরির বয়স চলে গেছে। চাইলেও সরকারি আর কোনো চাকরির আবেদন করতে পারবো না। সদর উপজেলার সাতমাইল বাজারের পাশে মানিকদিহি রেলক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে।
স্থানীয় হাফেজ মাওলানা শফিকুল ইসলাম নামে একব্যক্তি দুর্ঘটনা এড়াতে চেতনতামূলক সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন। সেখানে লেখা আছে—এই গেটে গেটম্যান নাই। নিজ দায়িত্বে চলাচল করুন। হাফেজ মাওলানা শফিকুল ইসলাম জানান, মানিকদিহি রেলক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। দুর্ঘটনা সচেতনতামূলক সাইনবোর্ডটি টাঙিয়ে দিয়েছি। যাতে মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারে। এর আগে যে গেটম্যান ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশের শিক্ষা বিস্তারে নটরডেম কলেজ মাইলফলক : স্পিকার
তিনি নিয়মিত গেটে থাকতেন না। প্রায় তিন মাস হয়েছে এখানে কোনো গেটম্যান নেই। এ ব্যাপারে পশ্চিমাঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক বীরবল মন্ডল জানান, সারাদেশে গেটকিপার সংকট রয়েছে। এজন্য কয়েক জায়গায় গেটকিপার নেই। বেতন-ভাতাসহ সার্বিক বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অচিরেই সমাধান হবে বলে আশা করি।
আপনার মতামত লিখুন :