নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে তলে তলে আপস হয়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে তলে তলে কোনো আপস হয়নি। আর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেশি হলেও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবে না। যদি ভোটার ভোট দেয় তাহলেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বিদেশিদের সঙ্গে কোনো টানাপোড়েন নেই। কারণ, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু এবং সংঘাতহীন নির্বাচন করার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তলে তলে কিছুই হয়নি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তারা আমাদের বন্ধু। তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। তাদের সঙ্গে আমাদের অনেক দিনের সম্পর্ক। আমেরিকা সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক। একাত্তরে আমেরিকা আমাদের বিপক্ষে থাকলেও যেদিন আমরা স্বাধীনতা পেলাম তারপর থেকে আমেরিকা আমাদের প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করছে।
তিনি বলেন, ভারত তো সবসময় আমাদের সহেযাগিতা করে আসছে। এখনও সহযোগিতা করছে। তাদের সঙ্গে আমাদের সোনালী অধ্যায়। ইউরোপ আমাদের বড় বাজার। তারা যদি আমাদের অপছন্দ করত আমাদের জিনিস কিনতো না। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) লেবারের অবস্থা ভালো করতে চান, আমরা স্বাগত জানাই। তবে সেটা বাস্তব হতে হবে।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রগুলো আপত্তি জানালেও হঠাৎ করে চুপ হয়ে যাওয়া কূটনৈতিক সাফল্য কি না—জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের নীতেতে বিশ্বাসী। যারা নীতিতে বিশ্বাস করে সব দেশ তাদের পছন্দ করে। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সামনে নিয়ে যেতে চাই। আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র নষ্ট করতে চাই না, আমরা সন্ত্রাস চাই।
ড. মোমেন বলেন, আমরা কখনও চাপ অনুভব করি না। আপনারা মিডিয়া আমাদের চাপ দিয়েছেন। আমাদের যে চাপ সেটা নিজেদের চাপ। আমরা নিজেরা চাপ অনুভব করি, যাতে একটা গ্রহণযোগ্য এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। আমরা দুনিয়াকে দেখাতে চাই। অন্যদের তাগিদে না। অন্যরা আমাদের সাহায্যের জন্য এসেছে।
তিনি বলেন, আমেরিকা আমাদের সাহায্যের জন্য এসেছে। সাহায্যটা হলো এই—যারা নির্বাচন বর্জন করবে বা প্রতিহত করবে আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) তাদের আমাদের দেশে (যুক্তরাষ্ট্র) নেব না। তাদের দেশে নেওয়া না নেওয়া তাদের বিষয়। এতে আমরা খুব খুশি।
মোমেন বলেন, আমেরিকা যেটা বলেছিল, যারা নির্বাচন প্রতিহিত করবে বা বর্জন করবে তাদের তারা ভিসানীতি প্রয়োগ করবে। আমি খুব খুশি হবো, যদি তারা সত্যি সত্যি প্রয়োগ করে। তারা (বিএনপি) তো নির্বাচন বর্জন করছে। যাতে নির্বাচন না হয় তার জন্য প্রচারৃ। আমেরিকা যে কমিটমেন্ট করে সেটা করলে ভালো।
নেতৃত্বের গাফিলতি এবং অপরিপক্কতার কারণে বিরোধী দল বিএনপি বিদেশির সমর্থন হারিয়েছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের উল্টো দল, তাদের ওপর বিদেশি অনেকের বিশ্বাস হারিয়ে গেছে। আগে মনে করেছিল (বিদেশিরা) তারা বোধহয় খুব শক্তিশালী। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর আন্দোলনের পর দেখল এটা গণতান্ত্রিক দল না। গণতান্ত্রিক দল সন্ত্রাসী তৎপরতা করে না, গেরিলাৃ।
আরও পড়ুনঃ বিজয় দিবসে সিলেটে ৫ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বর্ধনা জানালো সিসিক
স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে নির্বাচন হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই হবে। না হওয়ার কী কারণ আছে? অবশ্যই হবে। যদি ভোটার ভোট দেয় তাহলে এটা গ্রহণযোগ্য। যদি ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬-এর মতো নির্বাচন হয়, ১০-১৫ পার্সেন্ট ভোট হয়; তাহলে গ্রহণযোগ্য না। ওটা দেশের মানুষ গ্রহণ করে নাই বের করে দিয়েছে। বিদেশ তো গ্রহণ করবেই না।
ভোট কেন্দ্রে ভোটার নিয়ে আসা বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মোমেন বলেন, আমাদের এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো, আমরা চাই অধিক সংখ্যক লোক যেন কেন্দ্রে এসে ভোট দেয়। উল্টো দল (বিএনপি) আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কোনো আতঙ্কের কারণ নাই। এবারের নির্বাচন কমিশন খুব শক্তিশালী। আমাদের পুলিশ বাহিনী অনেক উন্নত। আতঙ্কের কোনো কারণ নাই। সব ভোট কেন্দ্রগুলো সিকিউর (নিরাপদ)।
আপনার মতামত লিখুন :