দলীয় প্রশাসন দিয়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা পাওয়া দুষ্কর। দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি করার নিয়ম রেখে নীতিমালা তৈরির উদ্যোগে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। দলীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা দিয়ে নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাছাই করা দুষ্কর বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সুজন সম্পাদক বলেন, তাদের মাধ্যমেই যদি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাছাই ও ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে শুধু প্রশ্নই উঠবে না, আগামী নির্বাচন প্রহসনের দিকে ধাবিত হতে পারে। শুক্রবার যুগান্তরকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাছাইয়ে ইসির খসড়া নীতিমালা প্রসঙ্গে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এরফলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের অনেক নির্বাচনের ফল বহুলাংশে তারা নিয়ন্ত্রণ করেছে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের পর থেকে অনেক বিতর্কিত কাজ করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেষ কয়েকটি কেন্দ্রের ফল সব শেষে ঘোষণা করা হয় যা সার্বিক ফলাফলকেই পরিবর্তন করে দিয়েছে। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম প্রমাণের পরও রাঘববোয়ালদের দায়মুক্তি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যেসব চুনোপুঁটিদের বিরুদ্ধে নির্বাচনি অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, নিজেদের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের মতো চুনোপুঁটিদের সাজার কথা বলেছে, যাদের অনেক সাজা কার্যকরও হয়নি। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছে এ কমিশন। এমন দুটি কম পরিচিত রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিয়েছে, যাদের অনেকেই কিংস পার্টি মনে করে। এছাড়াও বেসামাল বক্তব্য দিয়েছে এ কমিশন। এসব কারণে নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা ক্রমান্বয়ে তলানিতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরে প্রাণ গেল আরও ১৩ জনেরডেঙ্গু জ্বরে প্রাণ গেল আরও ১৩ জনের
জাতীয় নির্বাচনে ইসির কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন ইসির কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগের চেষ্টা করেছিলেন। এর কারণ হচ্ছে, নিজস্ব কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচন করা হলে সেই নির্বাচনে ইসির সরাসরি নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে ইসির কর্মকর্তারা স্বাধীনভাবে কাজও করতে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :