ইরফান হত্যার প্রতিবাদে যশোরে মানববন্ধন। সোমবার প্রেসক্লাব যশোরের সামনে ইরফান হত্যার প্রতিবাদে সহস্র নারী পুরুষ মানব বন্ধন করেছে। এদিন সকাল ১০ টায় মানবন্ধন শরু হয়। চলে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। সকাল নয়টা থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে যশোর শহরের খড়কী ও কারবালা থেকে এলাকাবাসী ইরফান হত্যার প্রতিবাদে জড়ো হতে শুরু করে। আস্তে আস্তে রাস্তার দুই পাশে সহস্র মানুষ জড়ো হয়ে যায়।
এরপর যশোর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজিবুল আলম মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করেন। তিনি হত্যার বিচার দাবিতে বক্তব্য রাখেন। সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা নাজিম উদ্দীন বাহাদুর, চালকলীগ নেতা হান্নানসহ অনেকেই।
মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা বলেন, ইরফান কোন নারী ঘটনায় সম্পৃক্ত নয়। এটি হত্যাকারীদের ছড়ানো গুজব। কেননা তার মত মেধাবী ভাল ছেলে ঐ এলাকায় দ্বিতীয়টি নেই। বরং চাকুরির জন্য দেওয়া ৫লাখ টাকা প্রদানকৃত সেই রেলগেটের কাদেরকে আটকে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ, তাহলে খুনের মোটিভ বের হবে। তবে রেলগেটের কোন কাদের সেটি সুস্পষ্ট উল্লেখ করেননি বক্তারা।
২২ ডিসেম্বর যশোর শহরের খড়কি কারবালা বামন পাড়ায় ইরফান ফারাজি (২৬) হত্যাকান্ডের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। নিহত ইরফান ফারাজি ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম ফারাজির ছেলে। ইরফান ফারাজির বড় ভাই ইমরান ফারাজি শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামী দেখানো হয়। মামলার এজাহার অনুসারে, ছোট ভাই ইরফান ফারাজি খুলনা পলিটেকনিক থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা পাশ করে। চাকরি না পেয়ে খড়কি কারবালা বামন পাড়া রোডে নিশাদ মোড়ের দক্ষিণ পাশে ফারাজি স্টোর নামে একটি মুদি দোকানে ব্যবসা করে। প্রতিদিনের মতো ২২ ডিসেম্বর বিকালে ইরফান দোকানে বসে।
ওই দিন বিকাল ৪ টার দিকে পার্শ্ববর্তী দোকানদার আজিজ উদ্দিনসহ অন্যদের মুখে সংবাদ পায় বিকাল পৌনে ৪ টার দিকে অজ্ঞাত ৪/৫ জন দোকানে এসে চিপস ক্রয়ের কথা বলে। ইরফান চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালে কোন কিছু বুঝে উঠার আগে তার বুকের বামপাশে ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করা হয়। ইরফান বুক চেপে ধরে বাইরে এসে ধর ধর করে চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয়রা ধাওয়া করলে দুর্বৃত্তরা চাকু হাতে নিয়ে উত্তর দিকে কারবালা কবরস্থানের পাশ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। লোকজন ঘটনাস্থলে যেয়ে ইরফানকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত
ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: রাস্তার সন্ধি জয়নুল আবেদীন রাজু উপ পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক দক্ষিণ
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এস আই প্রদীপ কুমার রায় জানান, আসামি এখনো আটক হয়নি। সিসি টিভির ফুটেজ বিভিন্ন অনলাইনে ছেড়ে দেয়ার কারণে আসামি আটক কঠিন হয়ে পড়েছে। আসামি আটক হবে তবে একটু সময় লাগবে। কি কারণে ইরফান ফারাজি হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন সেটা এখনো জানা যায়নি।
পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাকান্ডের কোন ক্লু দিতে পারেনি। তবে ধারনা করা হচ্ছে চাকরির লেনদেনকৃত টাকা কেন্দ্রিক এরফানকে হত্যা করা হতে পারে। স্থানীয় পত্র পত্রিকায়ও বিষয়টি এসেছে। তাছাড়া খুনী আসামিরা তাদের বন্ধুদের সাথে ফোনালাপ করার বিষয়টিও ইতিমধ্যে প্রশাসনের নজরে এসেছে বলে জানা গেছে। ঘন ঘন অবস্থান বদলের কারনে তাদের এখনো ধরা যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :